বি সি সি ডি আই বাংলা স্কুলের নিজস্ব ভবন উদ্ভোধন

66

ভার্জিনিয়া, মেরিল্যান্ড” ও ওয়াশিংটন ডি সি( ডি এম ভি) এলাকার প্রায় অর্ধশত বছরের পুরোনো, বাংলাদেশি কমিউনিটির পেরেন্ট ওরগ্যানাইজেশন ( মাতা সংগঠন) বি সি সি ডি আই বাংলা স্কুলের নিজস্ব নুতন ভবন উদ্ভোধন ও একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপিত হলো ২৬ ফেব্রুয়ারি গতকাল দৃষ্টি নন্দন অকোকোয়ান লেকের সবুজায়তন লেক রিজ এলাকায়। কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ, ছাত্র ছাত্রী, অভিভাবক, স্কুল পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক, বিদ্যানুরাগী, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার প্রায় তিনশতাধিক জনতার উপস্হিতিতে, স্কুল চত্বরে স্হাপিত শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মূল ভবনের ফিতা কেটে উদ্ভোধন করেন আমেরিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মদ ইমরান। ছোট্র সোনামনি, সকল বয়সের নারী পুরুষের সমারোহে মূহূর্তেই স্কুল প্রাংগনটি সূদুর উত্তর আমেরিকার রাজধানীর বুকে একটি ছোট্র বাংলাদেশে পরিনত হয়।

বাংলা স্কুলের অধ্যক্ষ কমিউনিটির অভিভাবক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব শামীম চৌধুরি, বাংলা স্কুলের বর্তমান পরিচালনা পরিষদের সভাপতি পন্কজ চৌধুরি, সহসভাপতি কমিউনিটির প্রিয় মুখ, এক্টিভিষ্ট ব্যাবসায়ি জসিম উদ্দিন, সাধারন সম্পাদক কমিউনিটি এক্টিভিষ্ট ও ডোমোক্র্যাট দলের মূলধারার রাজনীতিক রেদোয়ান চৌধুরীসহ পরিচালনা পরিষদের সদস্যগণের সার্বিক তত্বাবধানে সুন্দর মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়।

স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা, অভিভাবক ও স্কুল পরিচালনায় বিভিন্ন ভাবে সাহার্যকারী আগত কমিউনিটির সকলকে, প্রবাসে থেকেও তাদের অমূল্য সময়, শ্রম ও অর্থ দিয়ে পরবর্তি আমেরিকান বাংগালি প্রজন্মকে বাংলা, বাংগালি সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত রেখে, তা শিখিয়ে, রপ্ত ও চর্চার মাধ্যমে শিক্ষিত করে দেশপ্রেমিক (বাংলাদেশের প্রতি) তৈরির মাধ্যমে যে, দায়ীত্ব পালন করছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, চাকুরি, ব্যাবসা বা কোনরুপ বিনিময় ব্যাক্তিগত বৈষয়িক মুনাফা লাভের উর্ধে থেকে আমেরিকান হয়েও বাংলাদেশের জন্য যে দায়ীত্ব পালন করছেন, নিজেদের সময়, মেধা ও শ্রম দিয়ে দেশের প্রতি যে, দায় পালন করছেন, তা সরকারের চাকুরি করেও করা সম্ভব হয়ে উঠে না। রাষ্ট্রদূত সরকারের পক্ষ থেকে উপস্হিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে, এতদ্ধসংক্রান্ত যে কোন কাজ কর্মকান্ডে দূতাবাসকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করে সার্বিক সাহার্য করার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।তিনি আরও বলেন, এই নুতন প্রজন্ম আমেরিকান হয়েও আমেরিকান শিক্ষা ও সংস্কৃতির পাশাপাশি তাদের পিতা মাতার দেশকে, সংস্কৃতিকে নিজেদের হিসেবে চর্চা করছে, পরিচর্চা করছে এটি এক অসামান্য দেশপ্রেম ও কমিটমেন্টের বিষয় আর এর মূল কৃতিত্ব এখানে উপস্হিত সকল অভিভাবকদের।

আলোচনা অনুষ্ঠানের পর স্কুলের নৃত্য শিক্ষিকা রোকেয়া হাসি, ও রোজমেরি মিতুর পরিচালনা ও কোরিওগ্রাফিতে ছাত্রছাত্রীরা বেশ কিছু নাচ পরিবেশন করে। ছাত্র ছাত্রীরা সংগীত শিক্ষক বিশিষ্ট শিল্পি নাছির আহমেদের পরিচালনায়, তবলা শিক্ষক আশীষ বডুয়া ও গীটারিষ্ট শুভ্র হাসানের সমন্বয়ে ও সহযোগিতায় বেশ কিছু দেশাত্ববোধক ও একুশের গান পরিবেশিত হয় ও দর্শক শ্রোতারা একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপভোগ করে। সবশেষে কাজী ওয়াহিদুজ্জামান স্বপন ও আতিয়া মাহজাবিন নীতুর হ্রদয় গ্রাহী কবিতা আবৃত্তি দিয়ে সাংস্কৃতিক পর্ব শেষ হয়। অনুষ্টান শেষে উপস্হিত সকলকে দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়।

উল্লেখ্য যে, বাংলা স্কুলে আসা ছাত্র ছাত্রীদের বেতন অতি সামন্য। অভিভাবক ও বিভিন্ন শ্রেনীপেশার কমিউনিটির ব্যাক্তি বর্গের দান করা টাকাই হলো এই স্কুলের সার্বিক পরিচালনাসহ অন্যন্য ব্যায় নির্বাহের মূল উৎস। এখানে আমেরিকান বা বাংলাদেশ সরকারেরও কোন সরাসরি অনুদান বা প্রকল্প নেই। প্রায় অর্ধ মিলিয়ন ডলার মূল্যের এই ভবন ক্রয়ের বেশির ভাগই এসেছে অভিভাবক ও কমিউনিটির ব্যাক্তিবর্গের অনুদান থেকে। অনুদানকারী সকলের নাম ফলকের বোর্ডটিও ফিতা কেটে উদ্ভোধন করা হয়। ভবনটি ক্রয়ে মধ্যস্হতাকারি রিয়েল এষ্টেট ব্যাবসায়ী আনিস খান নিজের লভ্যাংশের অংশটিও স্কুলকে দান করেন। এবারের সন্মানীত দাতাগনের বাইরে আরও নতুন দাতা পাওয়া গেলে ভবনের বাকী অর্ধেক অংশও কেনার পরিকল্পনা আছে বলে জানান স্কুল পরিচালনা কমিটি।

নতুন ভবন কেনায় উল্লেখযোগ্য পরিমান বিশেষ অনুদানের স্বীকৃতি স্বরুপ কমিউনিটির বিশেষ পরিচিত স্বনামধন্য ব্যাক্তিত্ব মাসুমা খাতুন ও ওয়ালি ফাহমী দম্পতি, সিনিয়র সিটিজেন মাজহারুল হক, ড: ফাইজুল ইসলাম ও ইনারা ইসলাম দম্পতিসহ ডোনারদের নামে স্কুলের ডোনেশন বোর্ডের নাম ফলক উন্মোচন করা হয়। উল্লেখ্য যে, ভয়েস অব আমেরিকার অতি প্রাচীন কর্মকর্তা মাসুমা খাতুনের নামে স্কুলে মাসুমা খাতুন লাইব্রেরী কর্নার স্হাপন ও উদ্ভোধন করা হয়। আলোচনার শুরুতে সিনিয়র সিটিজেন সকলের শ্রদ্ধেয় মাসুমা খাতুন, মাজহারুল হক ও ড: ফায়জুল ইসলামও স্কুল শুরু ও পরিচালনায় তাদের কমিটমেন্ট ব্যাক্ত করে সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। পুরো অনুষ্টানটিকে ক্যামেরায় ধারন করে রাখেন কমিউনিটি সুপরিচিত ফটোসাংবাদিক বৈশাখি ডালাস।

**প্রেস বিজ্ঞপ্তি**