বুধবার বিবিসি রেডিও ফোর টুডে প্রোগ্রামে এ সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়। বড়দিন উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের অতিথি সম্পাদক হিসাবে সাক্ষাৎকারটি নেন প্রিন্স হ্যারি।
এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষতিকর দিক নিয়ে ওবামা বলেন, এ মাধ্যমের যাচ্ছেতাই ব্যবহারের কারণে মানুষের জটিল বিষয়গুলো বুঝতে সমস্যা হচ্ছে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যথেচ্ছ টুইটার ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ আছে। তবে সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে ওবামা বলেন, ক্ষমতায় থাকা মানুষদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সতর্কতার সঙ্গে বার্তা দেওয়া উচিত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এমন দিন আসছে যখন সত্য বলে আর কিছু থাকবে না। জনগণ কেবল তাই শুনবে এবং পড়বে যেগুলো কেবল তাদের নিজস্ব মতকেই আরো বদ্ধমূল করবে।”
“ইন্টারনেটের একটি বিপদ হচ্ছে, মানুষজন এখানে পুরোপুরি একটি ভিন্ন বাস্তবতায় বাস করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মিথ্যা তথ্য তাদের ভুল ধারণা এবং পক্ষপাতকেই আরো দৃঢ় করে তুলতে পারে।”
ওবামা আরও বলেন, “ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে স্যোশাল মিডিয়াকে আমরা এমনভাবে কাজে লাগাতে পারি কিনা- যাতে সমাজে বিভেদ সৃষ্টি না হয়ে বরং মানুষ নিজেদের ঐকমত্যের জায়গাগুলো খুঁজে পাবে- প্রশ্ন সেটিই।”
সমমনা মানুষদের একজোট হওয়া এবং একজনের সঙ্গে অপরজনের পরিচয় ও যোগাযোগের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটি মোক্ষম পন্থা বলে উল্লেখ করলেও ওবামা বলেন, এরপরও এ মাধ্যমের বাইরে গিয়ে মানুষের সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ হওয়াটাও জরুরি।
সরাসরি যোগাযোগের মধ্য দিয়ে মানুষের উগ্রবাদী চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসতে পারে বলেই মত প্রকাশ করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে একজন প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বের বোঝা বহনের অনুভূতিটি কেমন জিজ্ঞেস করা হলে ওবামা বলেন, “খুবই কঠিন ব্যাপার। জনগণের চোখের সামনে থাকাটা অনেক দিক থেকেই অস্বস্তিকর। অনেক দিক থেকেই চ্যালেঞ্জিং।”
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব ছাড়ার অনুভূতিটি কেমন? এ প্রশ্নের ব্যাখায় ওবামা বলেন, “এ এক মিশ্র অনুভূতি। কিছু কাজ হওয়া আর কিছু কাজ অসমাপ্ত থেকে যাওয়ার বিড়ম্বনা। সেইসঙ্গে দেশ কিভাবে সামনে এগুবে তা নিয়ে উদ্বেগটাও মনকে নাড়িয়ে দেয়।”
সশস্ত্র বাহিনী, মানসিক স্বাস্থ্য, কিশোর অপরাধ এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের মত বিষয়গুলো নিয়ে ফোর’স টুডের বড়দিনের বিশেষ পর্বগুলো তৈরি করেছেন হ্যারি। ওবামা ছাড়াও বাবা প্রিন্স চার্লসেরও সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি।