পৃথিবীর সব মানুষের কাছেই নিজের ঘর সবচেয়ে সুখের জায়গা। কিন্তু প্রতিদিন একই বাড়িতে থাকতে থাকতে একঘেয়েমি চলে আসাটা স্বাভাবিক। এই একঘেয়েমি জীবন থেকে মুক্তি দিতে নতুন আবাসস্থল নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন একদল স্থপতি। ক্লাউড আর্কিটেকচার অফিসের একদল স্থপতি এমনই এক অভিনব ভাসমান অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির পরিকল্পনা করছেন। মূলত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই তারা এমনটা চিন্তা করছেন। সব থেকে অবাক বিষয়, মহাশূন্যে ভাসমান এই অট্টালিকা এক জায়গায় স্থির থাকবে না। পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণরত স্যাটেলাইটের মতো এটি ঘুরে বেড়াতে সক্ষম হবে। মূলত মহাশূন্যের একটি কক্ষপথে স্থাপন করা হবে বিশেষ এই ভাসমান অট্টালিকাটি। এই ভাসমান অট্টালিকার নাম রাখা হয়েছে ‘অনালেমা টাওয়ার’। ভাসমান এই টাওয়ারটি তৈরি করা হবে দুবাইতে।
মহাশূন্যে ভাসমান অট্টালিকা তৈরির জন্য বিজ্ঞানীরা একটি দৈত্যাকার গ্রহাণুকে কাজে লাগানোর কথা ভাবছেন। পৃথিবীর বাইরে কক্ষপথে পরিভ্রমণ করা এই গ্রহাণুটির নিচে জোর করে আটকে দেওয়া হবে সেই ভাসমান অট্টালিকাটি। কেন্দ্রাপসারী ভূ-তাত্ক্ষণিক কক্ষপথে পরিভ্রমণরত এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর উত্তর থেকে দক্ষিণ গোলার্ধ চলাচল করবে। অন্যভাবে বললে নিউ ইয়র্ক থেকে দুবাই সব জায়গাই ঘুরে বেড়াতে সক্ষম ভাসমান এই অট্টালিকাটি। অনালেমা টাওয়ারের ডিজাইনার অসতাপ রুদাকেভিচ বলেন, এই অ্যাপার্টমেন্টটি তৈরিতে গতানুগতি ইট-পাথর ব্যবহার না করে কার্বন ফাইবার এবং অ্যালুমিনিয়ামের মতো তুলনামূলক হালকা এবং টেকসই উপাদান ব্যবহার করা হবে। আর গ্রহাণুটির নিচে টাওয়ারটিকে আটকে রাখা হবে শক্তিশালী তারের সাহায্যে। টাওয়ারের বিদ্যুত্ থেকে শুরু করে সব ধরনের জ্বালানির জন্য সোলার সিস্টেমকে কাজে লাগানো হবে। আর পানির সমস্যা মিটাতে কাজে লাগানো হবে মেঘ এবং বৃষ্টির পানিকে। ঘণ্টায় ৩০০ মাইল বেগে আকাশে ছুটে বেড়াবে টাওয়ারটি। ভাসমান টাওয়ারটির বাসিন্দারা যাতে একই সাথে পৃথিবীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারেন সে ব্যবস্থাও রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের মতে, এটি সফল হলে ভবিষ্যতে পৃথিবীর বদলে মহাশূন্যেই গড়ে উঠবে এই ধরনের আরো অনেক অ্যাপার্টমেন্ট।-সিএনএন