নিজস্ব প্রতিবেদক:
২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ‘আজ সারাবেলা’ ও ‘সুচিন্তা ফাউন্ডেশন’ আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনি, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলি’ শীর্ষক স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে ফেনী ইউনিভার্সিটিতে। ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর তায়বুল হক ভার্সিটির হল রুমে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান। স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের না্নান বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন তিনি। স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ‘সুচিন্তা ফাউন্ডেশন’র জয়েন্ট কো অর্ডিনেটর জাব্বার হোসেন। এসময় শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” পড়ার আহ্বান জানান মুক্তযোদ্ধা প্রফেসর তায়বুল হক। তাছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত বইসমূহ পড়ারও আহ্বান জানান।
তিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নিজের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের এসব স্মৃতিচারণ কোনো গল্প নয়; এটা হলো ইতিহাস। গল্প তো বানিেয় বলা হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ হলো সুদীর্ঘ ৯ মাসের রক্ত-ঘামের ইতিহাস।” যুদ্ধের সময়ের ক্যাম্পের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “ক্যাম্পে থাকা কালে টানা ৭ থেকে ১০ দিন ঠিক মত খেতে পারিনি।যখন একটু ভাত খাওয়ার সুযোগ পেয়েছি, তখন দেখি ভাতে পোকা। সেই পোকা ফেলেও ভাত খেয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা। জীবনের প্রতি কোনো মায়া ছিল না। দেশ রক্ষা করাই ছিল আমাদের মূল উদ্দেশ্য।”
তিনি বলেন, “৭৫এর পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঐ সময়টায় বঙ্গবন্ধুর নাম নেয়া যেত না। রাজাকারকে রাজাকার বলা যেত না। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়নি। সাহিত্যিক, কবি, লেখক ও সৃজনশীল ব্যক্তিরা তাদের সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরেছেন।” বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রফেসর তায়বুল বলেন, “১৯৭০ সালের ১১ মার্চ। দিনটি ছিল বুধবার। ঐদিন চৌমুহনী চৌরাস্তায় সভা করে ফেরার সময় বঙ্গবন্ধুর গাড়ি বহরে ছিলাম। দাগনভূ্ঁইয়াতে এক বৃদ্ধা শেখ মুজিবকে দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। ঐ বৃদ্ধা বঙ্গবন্ধুর শরীর স্পর্শ করে দোয়া করে বলেন, শেখ মুজিব তোমাকে দেখার অনেক ইচ্ছা ছিল। আজ আমার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। এভাবে দেশের বেশীরভাগ লোকের দোয়া ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্য। তাই তো তিনি একটি দেশ আমাদের উপহার দিতে পেরেছেন।” শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রফেসর তায়বুল আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের প্রজন্ম স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। এদেশ এমন সাজানো গোছানো ছিল না। তোমাদের এর শেকড়’কে জানতে হবে। দেশ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় জন্য অবদান রাখতে হবে, তৈরি করতে হবে একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র।”
ফেনী ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহ স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বলেন, “জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে তরুণ প্রজন্মের মাঝে চেতনা ধারণ করতে হবে। আর সেটা হলো ; বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই চেতনাকে ধারণ না করলে দেশকে কখনো ভালবাসা যাবেনা। আর দেশকে ভালবাসতে না পারলে কখনো জাতি এগিয়ে যাবেনা।