বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যাদের পল্টনের ঘটনায় আটক করা হয়েছে, তারা হচ্ছে একেবারে চিহ্নিত সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা কি রাজনৈতিক কোনো নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার? তিনি বলেন, বিএনপি হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচন বানচালের জন্য বিভিন্নমুখী অজুহাত তুলছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠক চলাকালে সাংবাদিকদের ডেকে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। সংবাদ সম্মেলন শেষে ওই বৈঠক আবারও শুরু হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাহলে কি বিএনপির বেশির ভাগ নেতা-কর্মী সন্ত্রাসী? সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করবে, ক্রিমিনাল অফেন্ডারকে গ্রেপ্তার করতেই হবে। আপনারা (বিএনপি) কি দায়মুক্তি কালচার গড়ে তুলবেন?’ তিনি আরও বলেন, বিএনপি যখন যা খুশি, তা–ই বলছে। আসলে তারা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচন বানচালের বিভিন্নমুখী অজুহাত তুলছে।
ক্ষমতাসীনরা সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে উসকানি দিচ্ছে, বিএনপির এ অভিযোগের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘এ পর্যন্ত কোথাও কোনো সংঘাত হয়েছে? কোথায় আমরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছি? হাওয়ায় একটি কথা ছেড়ে দিলে হবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপিকে বলব, তারা তথ্যপ্রমাণসহ বলুক, এই ক্ষেত্রে আমরা কী ভঙ্গ করেছি। ইলেকশন কোড অব কনডাক্ট আমরা ভায়োলেট করছি। তারা বলুক কোথায়?’
নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে কাদের বলেন, এত বড় একটা নির্বাচন। ২৮ তারিখে ঢাকা সিটিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন অনেকেই। একটি সিঙ্গেল ইনসিডেন্ট কি কোথাও ঘটেছে? ইউরোপীয় ইউনিয়ন তারা এখানে পরিবেশটা দেখে বলছে, এখানে আর পর্যবেক্ষক পাঠানোর কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিএনপিই শুধু আজকে নির্বাচনের পরিবেশ দেখতে পাচ্ছে না। যে পরিবেশটা নষ্ট করার সূচনা তাদের হাত দিয়ে শুরু হয়েছে। আমরা চাই নির্বাচনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক প্রতিযোগিতাপূর্ণ হোক। বিএনপি আর যা–ই হোক, তারা একটি বড় দল। একটি বড় দল নির্বাচন থেকে সরে যাক, আমরা সেটা চাই না। আমরা তাদের নির্বাচনে চাই। আমরা চাই একটি ইনক্লুসিভ, পার্টিসিপেটরি, ক্রেডিবল নির্বাচন। গতবারের মতো ভুয়া অভিযোগ দিয়ে বিএনপি নির্বাচন বয়কট করুক, এটা আমরা চাই না।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘কেউ বলে ১০০ সিট, কেউ বলে ৩০ সিট। কেউ বলে ১০০ বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। খালেদা জিয়া কি ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেননি? দম্ভ আর অহংকারের যে করুণ পরিণতি হয়, বিএনপি আজ সেই দেউলিয়াপনায় এসে ঠেকেছে।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনার ১৫টি উপকমিটি আছে। প্রত্যেকটি উপকমিটি কীভাবে কাজ করছে, এসব বিষয় জানতে আজকের বৈঠক। উপকমিটির আহ্বায়ক এবং সদস্যসচিবদের সবাই এখানে এসেছেন। উপকমিটির কার কাজের কী অগ্রগতি হলো এবং সমন্বয় যেন ভালোভাবে হয়, এগুলো নিয়ে আলোচনা করার পর দলের সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করা হয়েছে। সদস্যসচিবের বিশেষ দায়িত্ব আছে। আমরা নিজেদের মধ্যে মোটামুটি আলোচনা করে নিয়েছি। এ ছাড়া আরও কিছু আলোচনার আছে।’
আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে উপকমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবদের মধ্যে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে উপকমিটির নেতাদের মধ্যে মসিউর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জব্বার, দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, আফজাল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আবদুস সবুর, শাম্মী আহমেদ, সাবের হোসেন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।