প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ধারা আরও গতিশীল করতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিশেষ অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের, বিশেষ করে যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে আরও পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার বেজার গভর্নিং বডির সপ্তম ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের সামাজিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা আরও গতিশীল করতে চাকরির পেছনে ছোটার পরিবর্তে বিনিয়োগ করতে (১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন) ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিশেষ করে যুবসমাজকে উৎসাহিত করতে কাজ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী আবাদি জমি ও পরিবেশ রক্ষা করে চাকরির সুযোগ সৃষ্টিতে স্থানীয় বিনিয়োগ ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পায়নের পাশাপাশি কৃষি উন্নয়নের জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতিও একই আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে যোগ দেন। গভর্নিং বডির অন্য সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সচিবালয় থেকে সংযুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই, আমাদের অর্থনীতি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তবে, আমাদের আরও শিল্পায়নের প্রয়োজন। শিল্পায়ন ছাড়া কোনো দেশের অগ্রগতি হতে পারে না।’ তিনি দেশের ভূমির পরিমাণ কমে আসা সত্ত্বেও বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আবাদি জমি রক্ষায় প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
বেজার সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা শিল্পায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ডেলটা প্ল্যানও গ্রহণ করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আবাদি জমি এবং পরিবেশ রক্ষায় ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য বিশেষ এলাকা নির্বাচিত করেছি। তিনি বলেন, সরকার দেশে কর্মসংস্থান এবং দেশবাসীর ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বিশেষ করে রপ্তানি বৃদ্ধি করতে সারা দেশে পরিকল্পিত শিল্পায়ন করতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় (কেবল রাজধানী ও বন্দর এলাকা বাদে) বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করা হচ্ছে। এ ছাড়া আমরা কৃষি পণ্য কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে একটি বিশেষ এলাকায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকারে প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে দেশের সার্বিক উন্নয়ন করা। এ জন্য শিল্পোন্নয়ন এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
শেখ হাসিনা বাংলাদেশসহ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কোভিড-১৯–এর বিরূপ প্রভাব সত্ত্বেও দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।